নাম : বাংলা-কাকজঙ্ঘা, কাউরাটুরী, হিন্দী-কাকঙ্খা, সংস্কৃত-কাকজংগা ।
পরিচয় ঃ এই গাছের পাতা তুলসী পাতার সমান কিন্তু এই গাছে ফুল বড় হয় এবং কিনারায় কাটা কাটা থাকে। এই গাছের প্রত্যেক ডালে কাকজঙ্ঘার মত গটি থাকে। ঐ গটি ভাঙ্গিলেই গুঁড়া মত একপ্রকার পদার্থ নিগর্ভ হয়।
ব্যবহার ঃ কাকজঙ্ঘা চূর্ণ ঔষধে ব্যবহার হইয়া থাকে।
গুণ ও আময়িক প্রয়োগ : ইহা রক্তপিত্ত, কর্ণরোগ, ক্ষত ও বিষাদোষ নাশক।
কোন কোন রোগ আরোগ্য কারক
কাকজঙ্ঘা চূর্ণ সেবনে নিউমোনিয়া রোগ আরোগ্য হইয়া থাকে।
(কাঁকড়াশৃঙ্গী)
নাম : বাংলা-কাঁকড়াশৃঙ্গী, সংস্কৃত-শৃঙ্গী, কর্বট শৃঙ্গী, হিন্দী- কাকড়াসিঙ্গী
পরিচয় : কাঁকড়াশ্রষ্ঠীর পাতা হলুদ ও সবুজ মেশান। দূর হইতে ডাকাইলে পাতা ও ডালের মধ্যে শিংয়ের মত কিছু প্রতিভাত হয়।
গুণ ও আময়িক প্রয়োগ : শ্বাসকষ্ট, কাশি ও ক্ষয়কাশ রোগ নিবারক।
(কুড়চী)
নাম : বাংলা-কুড়চী, সংস্কৃত-কুটজ, হিন্দী-কুড়া।
পরিচয় ঃ এই গাছ বেশ বড় হয়, ফুল সাদা, পাতা পাতা। কুড়চী ফলের বীজকে ইন্দ্ৰয়ৰ বলা হয়। ইন্দ্ৰয়ৰ সম্বন্ধে পূর্বেই আলোচনা করা হইয়াছে।
ব্যবহার : ঔষধে কুড়টীর কাঁচা ছালই ব্যবহার করা হইয়া থাকে, শুষ্ক ছাল দ্বারা ঔষধ প্রস্তুত করিলে কার্যকরী শক্তি থাকে না। কুড়চীর বীজের কার্যকারিতা সম্বন্ধে পূর্বেই আলোচনা করা হইয়াছে।
গুণ ঃ ইহা রুক্ষ, শীতবীর্য, অগ্নিদীপক এবং কটু কথায় রসযুক্ত।
আময়িক প্রয়োগ ঃ ইহা অর্শ, অতিসার, রক্তদোষ, আমদোষ, পিত্তদোষ, কুষ্ঠ, তৃষ্ণা ও কফ বিনাশক।
মাত্রা ঃ
(ক) ঘন ক্বাথ-ছয় আনা পরিমাণ।
(খ) বীজ চূর্ণ-এক আনা।
(গ) বীজ ও ছালের ক্বাথ ১ ছটাক।
কোন কোন রোগ আরোগ্য কারক
১। কফে ও তৃষ্ণায় ঃ কুড়চীর ছালের ক্বাথ বা ছালচূর্ণ সেবন করিলে কফ ও তৃষ্ণা নিবারিত হইয়া থাকে।
২। কুষ্ঠ রোগে ও কুড়চীর কাথ ও বীজচূর্ণ সেবনে বিশেষ সুফল পাওয়া যায় ।
৩। প্রস্রাবের কষ্টে ঃ এক আনা মাত্রার -কুড়চীর ছালচূর্ণ মধুসহ সেবন করিলে প্রস্রাবের কষ্ট বিদুরিত হয়।
৪। রক্তদোষে : পাঁচ তোলা পরিমাণ কুড়চীর ছালের ক্কাথ চিনিসহ সেবন করিলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
৫। রক্তার্শে : প্রত্যহ এক আনা পরিমাণ কুড়চীর ছালের ক্বাথ সেবনে রক্তার্শ নিবারিত হইয়া থাকে ।
৬। অভিসার হইলে কুড়চীর স্থালের কাথ এক ছটাক পরিমাণে দিনে দুইবার মধুসহ সেবন করিলে অভিসার নিবারিত হয়।
৭। রক্ত আমাশয়ে : এক কেজি পরিমাণ কুড়চীর ছাল দশ কেজি জলসহ অগ্নিতে সিদ্ধ করিয়া দেড় কেজি জল থাকিতে নামাইয়া লইতে হইবে। শীতল হইবার পর পরিষ্কার ন্যাকড়ায় ঐ জল ছাঁকিয়া
লইয়া আবার আগুনে সিদ্ধ করিতে হইবে। যখন ঐ ক্কাথ ঘন গুড়ের মত হইবে তখন উহা নামাইতে হইবে। ঐ ক্বাথ দুই আনা পরিমাণ মধুসহ লেহন পূর্বক সেবন করিলে রক্তামাশয় দূর হয়। বলা বাহুল্য ইহা রক্তামাশয় নিবারণের শ্রেষ্ঠ ঔষুধ।
৮। জ্বর হইলে কুড়চীর চূর্ণ ও কাথ কুইনাইন অপেক্ষাও বিশেষ কার্যকর অথচ কুইনাইনের প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, কুড়চীর ছাল চূর্ণ বা ক্বাথ সেবনে তেমন প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না।
(কুড়)
নাম : বাংলা-কুড়, সংস্কৃত-কুষ্ঠ, হিন্দী-কুঠ।
পরিচয় : কুড় গাছের ঝাড় হইয়া থাকে, কুড়ের পাতা পান পাতার ন্যায়। দুই প্রকারের কুড় আছে ঃ (ক) মিঠা আর (খ) কটু।
ব্যবহার : খাইবার ঔষধে মিঠা কুড় ব্যবহার করা উচিত।
গুণ ও আময়িক প্রয়োগ : ইহা উষ্ণ, মধুর, আঠাল, ভীক্ষ্ণ, বীর্য বর্ধক, লঘু, কাশি, কফ ও বাতনাশক।
0 Comments